
আয়াতুল্লাহ শেখ মুহাম্মদ আল-ইয়াকুবির দৃষ্টিকোণ থেকে রোজার গুরুত্ব
মানবতার পরিপূর্ণতার পথ গমনের জন্য রোজা এটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার, যা আল্লাহ তা’লা নির্ধারিত করেছেন। আল্লাহ তা’লা কোরআন শরীফে বলেছেনঃ وَاسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلَاةِ
অনুবাদঃ আর সবর বা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো। (সুরা বাকারা, আয়াত ৪৫)
রোজা সবর বা ধৈর্যের উজ্জ্বলতম উদাহরণগুলির মধ্যে একটি।
মানুষ যখন নিজের উপর সর্বশক্তিমান আল্লাহর শাসন এবং প্রভাব সৃষ্টি করে এবং নিজেকে অন্যের আধিপত্য থেকে মুক্ত মনে করে, তাখন তাঁর জন্য পরিপূর্ণতা প্রমাণিত হয় এই প্রভাবগুলির মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল নাফসে আম্মারাহ (স্ব-আরোপিত) যা মানুষকে লালসার দিকে প্ররোচিত করে এবং এটি আমাদের তার আকাঙ্ক্ষার কণ্ঠস্বরে সাড়া দিতে বলে,। মানুষ জত দিন এই প্রথিবিতে জীবিত থাকে নিজের আত্মার উপর নিয়ন্ত্রণ করা উচিত, মানুষ ভালো আর মন্দের মধ্যে ঘিরে থাকে, মন্দের উপরে আধিপত্য ও নিয়ন্ত্রণই হল মানুষের বড় জেহাদ, যা তাঁকে পরিপূর্ণতার উচ্চতায় নিয়ে যায় এবং তাঁকে সালেহিনদের সঙ্গে সংযোজন করে তোলে এবং এটি ভাল সঙ্গী।
রোজা হলো সর্বোত্তম সাহায্যকারী ও অস্ত্র কারণ এটি মানুষের ইচ্ছাশক্তিকে শক্তিশালী করে, এটি একজন ব্যক্তিকে আনন্দ উপভোগ করা, অপ্রয়োজনীয় খাবার, পানীয়, যৌন মিলন ইত্যাদি থেকে বিরত রাখে। যখন মানুষ নিজের ইচ্ছাশক্তিকে শক্তিশালী করে তখন পৃথিবীর আনন্দগুলো কম গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয় এবং তখন সে সর্ব পরীক্ষায় সফল হয়, তবে সে যদি রোজার আধ্যাত্মিক দিকগুলির উপর মনোযোগী হয়।
রোজার বহু আহকাম (নিয়ম) ও শিষ্টাচার আছে যেগুলি ফিকহ এবং আখলাকএর পুস্তকগুলিতে উল্লেখ করা হয়েছে। আমি আমার বই {ইসলামী আইনের বিধান এবং রীতিনীতির ঐতিহ্যের মধ্যে রমজান মাস এবং ঈদ} (شهر رمضان و العید بین احکام الشرع و تقالید العرف)তে এর অনেক আধ্যাত্মিক, নৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক দিক তুলে ধরেছি। এই বইটি বহু বছর আগে প্রকাশিত হয়েছে। বিস্তারিত জানার জন্য ওই বইটি অধ্যয়ন করা যেতে পারে।
রোজা এমনই একটি এবাদাত যা মানুষকে পুরো রমজান মাস জুড়ে ফজর থেকে মগরিব পর্যন্ত কিছু এমন জিনিষের ব্যবহার থেকে বিরতি রাখে যাহার ব্যবহার সরিয়াতে আল্লাহর নিকটবর্তী হতে (قربةً الی اللہ) নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সুত্রঃ রেসালাএ আমালিয়াহ মুখতাসার সুবলউস-সালাম, আয়াতুল্লা-হুল উযমাহ শেখ মোহাম্মাদ আল-ইয়াকুবি, রোজা অধ্যায়, উর্দু অনুবাদ, পৃষ্ঠা ১২০-১২১
বাংলা অনুবাদঃ ডাঃ মোহাম্মাদ জয়নুল আবেদিন, নেপাল।